প্যারেন্টিং উপযোজনের প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানসমূহ
একক কিংবা উভয় পিতামাতার পরিবারেই পিতামাতার ভূমিকায় উপযোজনের জন্য কিছু প্রভাব বিস্তারকারী উপাদান রয়েছে।
প্যারেন্টিং উপযোজনের প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানসমূহ
প্যারেন্টিং উপযোজনের প্রভাব বিস্তারকারী উপাদানসমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলো:
১. গর্ভধারণের প্রতি ধারণা:
গর্ভধারণের সময় মহিলার বা মায়ের আচরণের ধারণা কেমন হবে তা মূলত নির্ধারণ করে থাকে তার শারীরিক মানসিক অবস্থা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই, যদি তার বিরূপ মনোভাব থাকে গর্ভধারণের প্রতি, সন্তান জন্মগ্রহণের পরপরই তা ঠিক হয়ে যায়।
২. পিতৃ-মাতৃত্বের ভূমিকার প্রতি ধারণা:
প্রাপ্তবয়স্করা পিতা-মাতার ভূমিকায় ভালো উপযোজন করতে সক্ষম, যদি তারা সন্তান নিতে চায়। কারণ তারা মনে করে তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য একটি সন্তান নেয়া প্রয়োজন, সামাজিক ও পরিবারের চাপের কারণে নয়।
৩. পিতা-মাতার বয়স:
নব্য পিতামাতাদের প্রবণতা থাকে সন্তানের দায়িত্ব নেয়ার দিকে এবং এসময় তারা অন্যান্য আগ্রহের বিষয়ের দিকে মনোযোগ দেয়ার সময় পান না। অন্যদিকে অভিজ্ঞ ও প্রাপ্তবয়স্ক পিতামাতারা তুলনামূলক উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত থাকে কখন কী করা লাগবে তা নিয়ে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, নব্য পিতামাতারা এক্ষেত্রে উত্তম উপযোজন করে থাকেন।
৪. সন্তানের লিঙ্গ:
পিতামাতার ভূমিকায় আচরণ অনেকটা নির্ভর করে সন্তানের লিঙ্গের উপর। কারণ তাদের যদি ইচ্ছা থাকে ছেলে সন্তানের এবং যদি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করে তাহলে সন্তানের প্রতি তাদের ইতিবাচক মনোভাব থাকবে, কিন্তু যদি মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করে তাহলে সন্তানের উপর নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করবে।
৫. সন্তানের সংখ্যা:
প্রাপ্তবয়স্ক স্বামী-স্ত্রীর যদি আশানুরূপ সংখ্যক সন্তান থাকে তাহলে তারা সন্তুষ্ট থাকেন। যদি এর চেয়ে কম বা বেশি সন্তান হয় তাহলে তারা উত্তম উপযোজনে ব্যর্থ হয়।
৬. পিতা-মাতার প্রত্যাশা:
যদি পিতামাতার সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন থাকে, আর সন্তান যদি সেই স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হয় তাহলে পিতামাতার প্রত্যাশা ও উপযোজন ব্যাহত হয়।
৭. পিতা-মাতার যোগ্যতার অনুভূতি:
শিশু প্রশিক্ষণ বা প্রতিপালন পদ্ধতি অনেক ক্ষেত্রে পিতামাতার কাছে দ্বন্দ্ব তৈরি করে এবং তা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাড়ায়। পিতামাতা হিসেবে উপযোজনের ক্ষেত্রে এটি ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
৮. পিতামাতার ভূমিকা পরিবর্তনের প্রতি আচরণ:
প্রাপ্তবয়স্করা পিতামাতা হলে তখন তাদের আচরণগুলো বন্ধু-বান্ধব কেন্দ্রিক না হয়ে পরিবারকেন্দ্রিক হয়ে যায়। তারা যেভাবে এই আচরণের প্রতি প্রতিক্রিয়া করে, সেটি উপযোজনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।
৯. সন্তানের মেজাজ:
যেসব সন্তানের মেজাজ সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং যারা অনেক প্রতিক্রিয়াশীল ও স্নেহপরায়ন তাদের লালন-পালনের ক্ষেত্রে সময় ও প্রচেষ্টা দিয়ে বাবা-মা নিজেদেরকে সফল ও গর্বিত মনে করে। এই মনোভাবটি পিতামাতার ভূমিকায় উপযোজনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে থাকে।