বৈবাহিক উপযোজনের শর্তসমূহ

বৈবাহিক উপযোজনের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে, যেগুলো উপযোজনের ক্ষেত্রে অবদান রাখে। এর মধ্যে ৬টি শর্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বৈবাহিক উপযোজনে শর্তসমূহ

বৈবাহিক উপযোজনে শর্তসমূহ নিম্নে দেওয়া হলো:

১. পিতৃমাতৃত্বের সময়: 

যদি প্রথম সন্তানটি বিবাহের প্রথম বছরেই আসে, যার আগে নব্য দম্পতিরা কোনো সময় পায়নি উপযোজন সম্পর্কে শেখার, অথবা তাদের আর্থিক অবস্থাকে কোনো একটি সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেনি তাহলে তারা চিন্তা ও চাপে পড়বে।

২. একটি স্থিতিশীল আর্থিক অবস্থা:

যদি আর্থিক অবস্থা যা চায় তা থাকে, যৌথ উপার্জনের মাধ্যমে, তাদের বৈবাহিক উপযোজন অনেক ভালো হবে, কিন্তু পিতৃত্ব-মাতৃত্বের কারণে যদি স্ত্রী তার স্বামীর উপার্জনের উপর নির্ভর করে তাহলে নিজেদের অনেক ইচ্ছা পূরণ থেকে তারা বঞ্চিত হবে যা তাদের জীবনের সুখের জন্য খুবই প্রয়োজন। অনেক যুবক আছে যাদের বসবাসের ক্ষেত্রে কতটুকু খরচ হবে সে সম্পর্কে অবাস্তব ধারণা রয়েছে। ফলে তাদের আর্থিক দক্ষতার সম্পর্কে তাদের যে প্রত্যাশা থাকে যা তাদের সুখের জন্য প্রয়োজনীয় তা মূলত অবাস্তবিক। যখন তারা বাস্তব আর্থিক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় তখন বৈবাহিক উপযোজনটি তাদের কাছে কঠিন মনে হয়।

৩. বিবাহ সম্পর্কে অবাস্তব প্রত্যাশা: 

যুবকদের মধ্যে যারা স্কুল শেষ করেই বিয়ে করে কিংবা কিছুদিন সহবাস করেই বিয়ে করে তারা বিয়ের বিভিন্ন সমস্যা ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকে না। তাদের বাড়িতে বা হোস্টেলে থাকার সময় তারা সমস্যা সম্পর্কে সচেতন থাকতেন না যখন তারা তাদের পিতামাতার যত্ন পাবেন না বা স্কুল, কলেজের গন্ডি পেরিয়ে আসবে। বিয়ের বড় ধরনের প্রোগ্রাম ও উপযোজনজনিত সমস্যা যোগ করে যার কারণ অবাস্তব প্রত্যাশা। একজন বর বলেছিল, 'বিবাহের পর্দা থেকে আবর্জনার বালতি, এটি একটি বিরাট পদক্ষেপ।'

৪. বাচ্চাদের সংখ্যা: 

বাচ্চাদের একটি আদর্শ সংখ্যায় যখন স্বামী ও স্ত্রী সম্মত হয় এবং যখন তাদের ততটি বাচ্চা থাকে তখন তাদের বৈবাহিক উপযোজন, যারা মনে করে তাদের সন্তান অনেক বেশি কিংবা অনেক কম তাদের তুলনায় বেশি ভালো হয়। 

৫. পরিবারে ক্রমিক অবস্থান:

এটি ব্যক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এতে করে সে বুঝতে পারে কখন কোন ভূমিকা পালন করতে হবে যা তারা পরবর্তীতে বিবাহের পরিস্থিতিতে স্থানান্তর করতে পারবেন। নতুন পরিস্থিতিটি যত বেশি পুরোনোটির অনুরূপ হবে, উপযোজন ততই উত্তম হবে। এ থেকে পাওয়া যায় যে, যারা বাড়িতে একা বাচ্চা হিসেবে বড় হয়েছে তাদের চেয়ে যারা কয়েকজন বাচ্চার সাথে মিলে-মিশে বড় হয়েছে তাদের উপযোজন তুলনামূলক সাজে হবে বিয়ের পরে। পুরুষদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো অবস্থান হলো বয়স্ক ভাইয়ের সাথে ছোট বোন; মহিলাদের জন্য ঠিক উল্টোটা প্রযোজ্য। স্বামীর কি বয়স্ক বোনের ছোট ভাই হওয়া উচিত এবং স্ত্রীর কি ছোট ভাইয়ের বড় বোন হওয়া উচিত? এখানে একটি সাংঘর্ষিক বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরি হয়; স্ত্রী তার স্বামীর নিকট বস হবার চেষ্টা করে কারণ সে তার ছোট ভাইয়ের সাথে তা করেছে। যখন পতি ও পত্নী উভয়েই পরিবারের বড় সন্তান হয়, তখন পরিবারে দম্পতির মধ্যে সাংঘর্ষিক সম্পর্ক দেখা যায়, কারণ একে অপরের উপর কর্তৃত্ব আরোপের চেষ্টা করে থাকে।

৬. শ্বশুরালয়ের সম্পর্ক:

সন্তোষজনক শ্বশুরালয়ের সম্পর্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ বৈবাহিক উপযোজনের ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিবাহের প্রাথমিক দিনগুলোতে। যখন পিতামাতা শূন্য গৃহে থাকার জন্য উপযোজন করে থাকেন, যা ঘটে থাকে তাদের সন্তানের বিয়ের পর। মধ্যবয়স নিয়ে আলোচনায় একটি বিষয় দেখা যায়, পিতামাতাদের উপযোজনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা দেখা যায় তখনই যখন তাদের সন্তান বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং তারা শখ পরিবর্তন করে এবং মনোযোগ দেয় ঐ নতুন বিষয়টির উপর সন্তানের দিক থেকে মনোযোগ পুনঃস্থাপনের জন্য। শ্বশুর-শ্বাশুরীর সাথে ভালো সম্পর্ক যুবকদের এবং তাদের সন্তানদের সংহতি ও স্থায়ী একটি পরিবারের অনুভূতি প্রদান করে, যা বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যদি বাড়িতে বাচ্চা থাকে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url