পেশাগত অভিযোজন মূল্যায়নের মানদন্ডসমূহ
পূর্বে খুব কম লোকই মধ্যবয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকতো, আর তার চেয়েও কম সংখ্যক লোক মধ্যবয়সে কোনো পেশায় নিয়োজিত থাকতো। এছাড়াও কাজের প্যাটার্ন ও প্রকৃতিও এখনকার তুলনায় ধীরগতিতে পরিবর্তিত হতো। ফলে খুব কম সংখ্যক লোকই এই ধরনের পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত হতো এর সবই পরিবর্তন হয়েছে বিশেষ করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, যখন এখনকার মধ্যবয়সীরা মাত্রই কাজে ঢুকছেন। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পূর্বের তুলনায় এখন আরো বেশি সংখ্যক ব্যক্তি এই কাজের প্রকৃতির পরিবর্তন দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ লেবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৯৭২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৩.৭ মিলিয়ন মধ্যবয়সি নারী-পুরুষ কাজ করতেন এবং ধারণা করা হয়েছিল ১৯৯০ সাল নাগাদ এটি বেড়ে ৪৫.৯ মিলিয়নে দাঁড়াবে। যেহেতু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকান জীবনযাত্রা ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে, কাজের পরিবেশে বিভিন্ন নিয়ামক ও নতুন নতুন অবস্থা কাজের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়াকে আরো কঠিন করে তুলেছে।
বৃত্তিমূলক উপযোজন মূল্যায়ন
মধ্যবয়সে নারী ও পুরুষ তাদের কর্মক্ষেত্র থেকে যা অর্জন করে এবং যে পরিমাণ সন্তুষ্টি লাভ করে তার উপর ভিত্তি করে বৃত্তিমূলক উপযোজন সৃষ্টি হয়। এ বিষয়গুলো বিবেচনা বহির্ভূত থাকতে বৃত্তিমূলক উপযোজন নির্ণয় যথার্থ হবে না।
১. অর্জন
কর্মক্ষেত্রে আয়, সম্মান, কর্তৃত্ব, স্বাধীনতা এগুলো অর্জনের ফলে মধ্য বয়সে ব্যক্তি সফলতা লাভ করে। অনেকে যথেষ্ট প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা লাভের পরেও তাদের জীবিকা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে না, কেননা এ ক্ষেত্রে তাদের অর্জনের মাত্রা সীমিত। আবার অনেকে নিজের যোগ্যতার ভিত্তিতে বৃত্তিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও এবং যথেষ্ট প্রশিক্ষণ লাভ করলেও সামগ্রিকভাবে নিজেকে ব্যর্থ মনে করেন কেননা তরুণ বয়সে তারা যে সফলতা প্রত্যাশা করেছিল তা তারা জীন করতে পারেনি। এই অর্জন ও সন্তুষ্টির অভাব তাদেরকে নিজেদের জীবিকার প্রতি অসন্তুষ্টি করে তোলে। বৃত্তিমূলক সফলতা অর্জনে নারীরা মধ্যবয়সে নিজেদের ব্যর্থ মনে করেন কেননা সংসার ও সামাজিক দায়িত্ব পালন শেষে নারীরা যখন পুনরায় কর্মে যোগদান করে তখন তারা নিজেদের প্রাপ্য মর্যাদা থেকে নিজেকে বঞ্চিত মনে করে।
২. সন্তুষ্টি
শিল্প কারখানার কর্মীদের জন্য বয়সের চল্লিশের দশক হচ্ছে কাজের সন্তুষ্টির জন্য একটি সংকটপূর্ণ সময়। আর এই সময়টি ব্যবসায়ী বা অন্যান্য পেশাজীবীদের জন্য কিছুটা পরে আসে। বয়সের পঞ্চাশের দশকের শেষ বা ঘাটের দশকের শুরুর দিকে সাধারণত কাজের সন্তুষ্টিতে' একটি তীক্ষ্ণ পতন লক্ষ করা যায়। বাধ্যতামূলক অবসরের পাঁচ বছর পূর্বে, ষাট, বাষট্টি বা তেষট্টি যাই হোক না কেন, পুরুষের কাজের সন্তুষ্টিতে একটি আমূল নেতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এই পরিবর্তনের প্রধান কারণ হতে পারে পুরুষেরা বুঝতে পারেন যে এখন আর তাদের উন্নতির পথ নেই, যতই তারা কঠোর চেষ্টা করুন বা বিশ্বস্ততার সাথে কাজ করুক না কেন। মধ্যবয়স বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে কাজের সন্তুষ্টিও কমতে থাকে যেহেতু ব্যক্তির কাজের গতি কমে যায় এবং সহজেই ক্লান্তি এসে পড়ে, উভয়ই বয়স বাড়ার ফলে হয়ে থাকে। পাশাপাশি তারা অনেকসময় জুনিয়রদেরকে ক্ষতিকর মনে করে, যারা কিনা তাদের চেয়ে দ্রুত কাজ করতে পারে এবং বয়স্কদের অবসরের পর সেই স্থানে আসীন হওয়ার জন্য উন্মুখ থাকে। এগুলো ব্যক্তির কাজে সন্তুষ্টি দেয় না।
মধ্যবয়সি মহিলারা পুরুষের তুলনায় কাজে যতটুকু সন্তুষ্ট অর্জন প্রয়োজন তাও করতে পারেন না। এবং পুরুষদের মতোই বয়স বাড়ার সাথে সাথে অবসরের আগ পর্যন্ত কাজে অসন্তুষ্টি বাড়তেই থাকে। সংখ্যালঘু দলের নারী-পুরুষরাও এই কারণে কাজের অসন্তুষ্টিতে ভোগেন।
যখন কাজে সন্তুষ্টি থাকে কর্মীরা কাজের আদর্শমান বজায় রাখার জন্য যা যা সম্ভব সবই করেন। এর জন্য যদি তাদেরকে বাড়তি চাপ নিতে হয় তাও তারা করবেন, নিয়োগকর্তার প্রতি অনুগত থাকবেন, কাজ থেকে অযথা ছুটি নেবেন না, সহকর্মীদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবেন, কোনো কিছু অপছন্দ হলেও অভিযোগ করবেন না।