প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া
প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়ার প্রধান কয়েকটি লক্ষণ হলো উল্লেখন (Reference), প্রভাবন (Influence), উৎপীড়ন বিভ্রান্তি (Persecution) এবং বিরাটত্বের (Grandeur) বিভ্রান্তি। তবে এ চারটি লক্ষণ ছাড়াও সিজোফ্রেনিয়ার অন্যান্য সাধারণ লক্ষণ বর্তমান থাকে।
উল্লেখনের বিভ্রান্তিতে রোগী মনে করে যে, আশপাশের সবাই তাকে নিয়ে আলোচনা করছে।
প্রভাবনের বিভ্রান্তিতে রোগী মনে করে যে, অন্য লোকেরা তাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
উৎপীড়ন বিভ্রান্তিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মনে করে যে, সকলে তাকে উৎপীড়িত করার বা বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে। এছাড়া উৎপীড়ন বিভ্রান্তিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মনে করে যে, সকলে তাকে উৎপীড়িত করার বা বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে।
এছাড়া বিরাটত্বের (Grandeur) বিভ্রান্তিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মনে করে যে, সে কোনো বিভ্রান্ত ব্যক্তি বা কোনো প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক চরিত্র।
সাধারণত প্যারানয়েড রোগী খেয়াল, বিরক্তিপ্রবণ এবং সন্দেহপ্রবণ হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে সে সকল স্বজনের প্রতি সন্দিগ্ধচেতা হয়ে ওঠে। এমনকি এসব রোগী বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, তাদের স্ত্রী বা স্বামীরা অন্যের সাথে গোপনে প্রেম করছে; অর্থাৎ, তারা তাদের স্বামী বা স্ত্রীকে ব্যভিচার/ব্যভিচারিণী বলে সন্দেহ করে। এসব রোগী মাঝে মাঝে সতর্ক, অস্থির, বাচাল, আক্রমণাত্মক কিন্তু দ্বান্দ্বিক ও ভীত হয়ে পড়ে। তবে তারা আবেগীয়ভাবে সাড়া দিতে পারে। সিজোফ্রেনিয়ার অন্যান্য ধরনের রোগীদের তুলনায় এসব রোগীরা একটু বেশি সজাগ এবং বাকপটু হয়। ভ্রান্তবিলাসে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও এদের ভাষা (কথাবার্তা) অসংলগ্ন নয়। ফ্রয়েডিয়ান মনঃসমীক্ষবাদীরা এ রোগকে সমরতিমূলক (Homoexual) অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণ বলে মনে করেন। মনোবিদ ক্লাফ, ডেভিস ও সেলজার প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়ার এরূপ কারণ পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণ করেন।