ক্যাটাটোনিক টাইপ সিজোফ্রেনিয়া

আমেরিকার 'মনোচিকিৎসক সমিতি' অস্বাভাবিক আচরণের শ্রেণিবিন্যাস সিজোফ্রেনিয়ার ৯টি শ্রেণির উল্লেখ করেছে- তার মধ্যে একটি হলো ক্যাটাটোনিয়া।

ক্যাটাটোনিক টাইপ সিজোফ্রেনিয়া

এ ধরনের সিজোফ্রেনিয়া অত্যন্ত আকস্মিকভাবে রোগীর মধ্যে দেখা দেয়। যদিও অনুসন্ধান করলে রোগীর অতীত জীবনে ধীরে ধীরে বাস্তব থেকে অপসারণ ও আবেগের উদাসীনতার ইতিহাস পাওয়া যাবে। তবে ক্যাটাটোনিয়ায় যদিও বাস্তব থেকে অপসারণের মাত্রা যথেষ্ট বেশি তবু এর নিরাময়ের সম্ভাবনা অন্যান্য ধরনের চেয়ে বেশি।

ক্যাটাটনিক রোগী দুটি মানসিক অবস্থার মধ্যে ঘোরাফেরা করে; যথা- আচ্ছন্ন অবস্থা এবং উত্তেজিত অবস্থা।

১. আচ্ছন্ন অবস্থা: 

এ অবস্থার রোগী সব ধরনের সজীবতা হারিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বা দিনের পর দিন নিশ্চল হয়ে একই ভঙ্গিতে বসে থাকে। এ অবস্থায় সে খাওয়া-দাওয়া করে না, এমনকি মলমূত্র প্রয়াসকেও নিয়ন্ত্রণ করে না। যদিও রোগী আচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে তবু তার চারপাশের ঘটনা সম্বন্ধে সে সম্পূর্ণ সচেতন থাকে। কখনও কখনও নেতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তে রোগীর মধ্যে অনুভাবনীয়তা দেখা যায়। সে তখন অপরকে অনুকরণ করে, আপনা-আপনি অপরের আদেশ পালন করে কিংবা একই কথা বার বার পুনরাবৃত্তি করে।

এ সময় তার হাতটা যদি কোনো বিশেষ অবস্থায় রেখে দেওয়া হয় তাহলে সে সেই অবস্থাতেই বেশ কিছুক্ষণ হাতটি রেখে দেবে। এর নাম মোমের মতো নামনীয়তা। এই আচ্ছন্ন অবস্থায় রোগী প্রায়ই বিভ্রান্ত ও অলীক বিক্ষণে ভোগে।

২. উত্তেজিত অবস্থা: 

এ অবস্থা অত্যন্ত আকস্মিকভাবে দেখা দিতে পারে। এ সময় রোগী ভীষণভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে। সে উত্তেজিতভাবে অর্থহীন কথা বলে, চারদিকে ঘোরাফেরা করে এবং নিজের কিংবা অপরের প্রতি গুরুতর আক্রমণধর্মী আচরণ করে। এই উত্তেজিত অবস্থা কয়েক ঘণ্টা বা কয়েক দিন ধরে চলতে পারে। মোনিসন (Monison, 1873) ২০০ জন ক্যাটাটনিক রোগীদের পরীক্ষা করে দেখেন যে, এদের ১১০ জন আচ্ছন্ন স্বভাবের, ৬ জন উত্তেজিত এবং ২৩ জন মিশ্র স্বভাবের ছিল। এ দলগুলোর মধ্যে বয়স, লিঙ্গ ও শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো পার্থক্য ছিল না।

চিকিৎসা: 

সাধারণত শক থেরাপি, কেমোথেরাপি ও সাইকো-থেরাপির মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url