পীড়ন কি ?

মানসিক স্বাস্থ্য অস্বাভাবিক আচরণের সাথে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যয় হলো পীড়ন। মানুষের জীবন সরল এবং স্বাভাবিক হতো যদি তার দৈহিক ও মানসিক চাহিদা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যেত। কিন্তু আমরা জানি যে, এই চাহিদাসমূহ পূরণের ক্ষেত্রে পরিবেশগত, ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয় যা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে দেয় না। এই বাধা ব্যক্তির মধ্যে অভিযোজনমূলক চাহিদা (Adjustment demand) সৃষ্টি করে। এই অভিযোজনমূলক চাহিদার অপর নামই পীড়ন।

পীড়ন: 

পীড়ন হলো মনোবৈজ্ঞানিক পরিভাষা যা মানুষের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্যহীন অবস্থাকে বোঝায়। যে অবস্থা বা পরিস্থিতি ব্যক্তির জন্য নতুন অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি করে সেগুলোকে পীড়ন বলে। আবার অন্য কথায় বলা যায়, এ ধরনের পরিস্থিতি ব্যক্তির মধ্যে যে মানসিক অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি করে, সে মানসিক অবস্থাকে পীড়ন বলে।

অস্বাভাবিক ও ক্ষতিকর মানসিক উত্তেজনা ও উৎকণ্ঠা হিসেবে মানসিক পীড়ন ব্যক্তির আচরণগত, শারীরিক, আবেগীয় ও বুদ্ধিবৃত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যার সৃষ্টি করে। শরীরবিজ্ঞানিগণ মনে করেন যে, শারীরিক রোগের প্রায় ৭৫ ভাগই মানসিক পীড়ন সংশ্লিষ্ট। দীর্ঘমেয়াদি মানসিক পীড়ন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় আচরণগত বিচ্যুতি ডেকে আনে।

উপসংহার: 

সাধারণত হতাশা বা ব্যর্থতার ফলে প্রাণীর অভ্যন্তরীণ জগতে যে বেদনাদায়ক অবস্থার সৃষ্টি হয় তাই পীড়ন। সাধারণ অর্থে পীড়ন বলতে ব্যক্তির উপর আরোপিত অভিযোজনমূলক চাহিদা এবং এর ফলে যে সমন্বয়হীন অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে পীড়ন বলে।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url